শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাগমারা মোড় থেকে জৌকুড়া ফেরীঘাট পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ৬কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ কাজ দীর্ঘ ৩৩মাসেও সম্পন্ন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক গ্রামের মানুষ।
অথচ সড়কটির কাজ বাস্তবায়নের সময়সীমা ছিল ১৮মাস। নির্ধারিত সময় পাড় হওয়ার পরেও আরো দু’দফায় মেয়াদ বাড়ানোর সাথে বাড়ানো হয় চুক্তিমূল্যও। এরপরও এ সময়ের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে কি না সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবী সড়কটিতে ১০ চাকাসহ বিভিন্ন ধরণের বালুবাহী ট্রাক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হয়েছে। ফলে সড়কটি নির্মাণে লাভ তো দুরের কথা ৫ কোটি টাকা লোকসান হবে তাদের।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে এ আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪.২৭ মিটার থেকে ৮.৫ মিটার প্রশস্তকরণের কাজ ২৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা চুক্তিমূল্যে যৌথভাবে শুরু করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসপেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স ও ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। সড়কটির নির্মাণ কাজের সময়সীমা ছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় আরো দুই দফায় বাড়ানো হয় কাজের মেয়াদ। সেই সাথে চুক্তিমূল্যও ২৯ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ কোটিতে। এরপরও এখনো সড়কটির ৪০ ভাগ কাজ অসম্পন্ন রয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে ঢিলেঠালাভাবে কাজের সুযোগে অনেকেই আবার সড়কটির উপর বসিয়েছেন বালুর চাতাল। অথচ এই সড়কটি দিয়েই জৌকুড়া ফেরী ঘাট হয়ে পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার মানুষ বাসে যাতায়াত করতো। সড়কটির বেহাল দশার কারণে বর্তমানে এসব অঞ্চলের দুরপাল্লার বাসসহ স্থানীয় লোকাল বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, সড়কটির উন্নয়ন কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় বালুবাহী ট্রাক চলাচলে বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দ ও কাদা তৈরী হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আবার শুকনা মৌসুমে সৃষ্টি হয় ধুলাবালি। এমন পরিস্থিতিতে চলাচল তো দূরের কথা সড়কটির আশে পাশের বাড়ীতে বসবাস করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। ইতোপূর্বে সড়কটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবীতে একাধিকবার মানববন্ধন করা হলেও কর্ণপাত করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রতিনিধি ইঞ্জিঃ মোঃ আমজাদ হোসেন জানান, সড়কটির উন্নয়ন কাজের সময়েও চলাচল করেছে বালুবাহী ১০ চাকার ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের ট্রাক। এতে নির্মাণ কাজ বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। বাধ্য হয়ে মাঝে মধ্যে আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধও রেখেছি। এসব কারণে সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন করতে আমাদের অনেক সময় বেশি লাগছে। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে ৫ কোটি টাকার উপর। তবে সম্প্রতি আমরা ১০ চাকাসহ সকল ধরণের বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করেছি। আশা করি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।
রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন জানান, বেশ কিছু জটিলতার কারণে কাজ করতে দীর্ঘসূত্রিতা হয়েছে। এ জন্য দুবার কাজের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এখন কাজ করতে ঠিকাদারের কোন সমস্যা নেই। সড়কটিতে প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। চলতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যেই সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Leave a Reply